প্রভুর বিশেষ দাস 
42
1 “আমি আমার দাসের দিকে তাকাই! 
আমি তাকে সমর্থন করি| 
সে হচ্ছে সেই জন, যাকে আমি বেছে নিয়েছিলাম| 
আমি তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট| 
তার ওপর আমি আমার আত্মা রেখেছি| 
সে ন্যায়সঙ্গত ভাবে জাতিসমূহের বিচার করবে| 
2 পথে-ঘাটে সে চিৎকার করবে না| 
সে তীব্র চিৎকার করবে না অথবা তার গলা লোকদের মধ্যে শোনা যাবে এমন করবে না| 
3 সে ভদ্র হবে, জলাশয়ের ধারে গজিয়ে ওঠা আগাছা সে কখনও ভাঙবে না| 
দুর্বল আগুনকেও সে কখনও নিভিয়ে দেবে না| 
সে ন্যায় ভাবে বিচার করবে এবং সত্যকে বের করবে| 
4 পৃথিবীতে ন্যায় বিচার না আনা পর্যন্ত সে দুর্বল হবে না, 
অথবা নিষ্পেষিত হবে না| 
দূরবর্তী স্থানের লোকরা তার শিক্ষামালায়় আস্থাবান হবে|” 
প্রভু শাসক, প্রভুই বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা 
5 প্রভু প্রকৃত ঈশ্বর, তিনিই এই সব বলেছেন| প্রভু আকাশ বানিয়েছেন| তিনি আকাশকে সারা বিশ্বের ওপর ছড়িয়ে দিয়েছেন| তিনি পৃথিবীর সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা| তিনি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন| পৃথিবীর ওপর যারা হেঁটে বেড়ায় তাদের প্রত্যেক লোককে তিনি একটি আত্মা দেন| 
6 “আমি তোমাদের প্রভু, সঠিক কাজ করতে তোমাদের ডেকেছিলাম| 
আমি তোমাদের হাত ধরেছি| 
আমি তোমাদের রক্ষা করেছি এবং তোমাদের মাধ্যমে আমি লোকদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি| 
তুমি সমস্ত জাতিগুলির জন্য একটি আলোস্বরূপ হবে| 
7 তুমি অন্ধ লোকের চোখ খুলে দেবে এবং তারা সব কিছু দেখতে পাবে| 
বহুলোক কয়েদখানায বন্দী; তুমি তাদের মুক্ত করে দেবে| 
বহুলোক বাস করে অন্ধকারে, জেলের থেকে বাইরে আসবার জন্য তাদের তুমি নেতৃত্ব দেবে| 
8 “আমিই প্রভু| 
আমার নাম যিহোবা| 
আমার মহিমা আমি অপরকে দেব না| 
যে মহিমা আমার পাওয়া উচিৎ সেই প্রশংসা মূর্ত্তিদের আমি নিতে দেব না| 
9 শুরুতেই আমি বলেছিলাম, কিছু একটা ঘটবে| 
এবং ঐসব জিনিস ঘটেছিল| 
এবং এখন অন্য কিছু ঘটার আগেই, 
তোমাদের আমি ভবিষ্যতে কি ঘটবে সে সম্বন্ধে জানাব|” 
ঈশ্বরের প্রশংসা গীত 
10 প্রভুর উদ্দেশ্যে গাও নতুন গান| 
তোমরা দূর দেশের লোকরা, 
তোমরা দূর দেশের নাবিকরা, 
তোমরা সমুদ্রের প্রাণীরা, 
তোমরা দূরবর্তী জায়গার লোকরা প্রভুর প্রশংসা কর! 
11 মরুভূমি ও শহর, পূর্ব ইস্রায়েলের কেদরের গ্রামগুলি 
প্রভুর প্রশংসা কর| 
শেলাবাসীরা আনন্দগীত গাও! 
পর্বতশৃঙ্গ থেকে তোমরা গেয়ে ওঠ| 
12 তারা প্রভুকে মহিমাম্বিত করুক| 
দূর দেশের লোকরা প্রভুর প্রশংসা করুক| 
13 প্রভু বলবান সৈন্যের মত চলে যাবেন! 
তিনি হবেন যুদ্ধ করতে প্রস্তুত মানুষের মত| 
তিনি প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে উঠবেন| 
তিনি কাঁদবেন, উচ্চস্বরে চিৎকার করবেন এবং তার শত্রুদের পরাজিত করবেন| 
ঈশ্বর প্রচণ্ড ধৈর্য্য্যশীল 
14 “দীর্ঘদিন ধরে আমি কিছুই বলিনি| 
আমি নিজেকে সংযত করে রেখেছিলাম, বলিনি কোন কিছুই| 
কিন্তু এখন আমি প্রসব করতে যাচ্ছে এমন এক মহিলার মতো চিৎকার করে কাঁদব| 
আমি জোরে জোরে সশব্দে প্রশ্বাস নেব| 
15 আমি পাহাড়-পর্বত ধ্বংস করব| 
আমি সেখানে জন্মানো সমস্ত গাছপালাকে শুকিয়ে দেব| 
আমি নদীকে পরিণত করব শুকনো জমিতে| 
আমি জলাশয়কে শুকিয়ে দেব| 
16 তারপর আমি অন্ধদের নেতৃত্ব দেব এক অজানা পথে 
যে সব স্থানে তারা কখনও যায়নি| 
অন্ধদের নিয়ে যাব সেই সব স্থানে| 
তাদের জন্য অন্ধকারকে আলোময় করে দেব| 
রুক্ষ জমিকে মসৃণ করে তুলব| 
আমি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা সবই করব 
এবং আমার লোকদের ছেড়ে যাব না! 
17 কিন্তু কেউ কেউ আমাকে মেনে চলা বন্ধ করেছে| 
ঐসব লোকদের সোনায় বাঁধানো মূর্ত্তি আছে| 
তারা ঐসব মূর্ত্তিদের বলে, ‘তোমরাই আমাদের দেবতা|’ 
যে লোকরা তাদের মূর্ত্তিগুলিতে আস্থা রাখে, তারা মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং লজ্জা পাবে| 
ঈশ্বরের কথা শুনতে নারাজ ইস্রায়েল 
18 “তোমরা, বধির লোকরা আমার কথা তোমাদের শোনা উচিৎ| 
অন্ধ লোকরা, তোমাদের আমাকে দেখা এবং আমার দিকে তাকানো উচিৎ|” 
19 সারা পৃথিবীতে আমার সেবক (ইস্রায়েলের লোকজন) সব চেয়ে অন্ধ| 
যে বার্তাবাহককে আমি পৃথিবীতে পাঠিয়েছি সেই সবচেয়ে বধির| 
যে লোকটির সঙ্গে আমি বন্দোবস্ত করেছিলাম, প্রভুর দাস সে-ই সবচেয়ে বেশী অন্ধ| 
20 আমার দাস অনেক মহান জিনিষ দেখেছে, 
কিন্তু সে সেসবের প্রতি মনোযোগ দেয় না| 
সে কানে শুনতে পায় 
কিন্তু সে মানতে চায় না|” 
21 প্রভু চান তাঁর সেবকরা ভাল হোক্| 
প্রভু চান তাঁর আশ্চর্য্যজনক শিক্ষামালাকে তারা শ্রদ্ধা করুক| 
22 কিন্তু লোকগুলিকে দেখো| 
অন্য লোকরা তাদের পরাজিত করেছে এবং তাদের জিনিস চুরি করে নিয়েছে| 
প্রতিটি যুবক ভীত| 
তারা জেলে বন্দী| 
লোকরা তাদের সব টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে| 
তাদের রক্ষা করার কেউ নেই| 
অন্যরা তাদের টাকা নিয়ে নিয়েছে| 
“এই টাকা ফিরিয়ে দিয়ে যাও,” একথা বলার মতোও কেউ নেই| 
23 তোমাদের কেউ কি ঈশ্বরের বাক্য শুনেছিলে? না! কিন্তু তোমাদের উচিৎ কাছ থেকে তাঁর কথা শোনা, এবং যা ঘটেছে সে সম্পর্কে মনোযোগ দেওয়া| 
24 যাকোব ও ইস্রায়েল থেকে লোকদের ধনসম্পদ নিতে কে দিয়েছিল? প্রভুই তাদের এসব কাজ করার অনুমতি দিয়েছিলেন| আমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কাজ করেছিলাম| তাই প্রভু আমাদের ধনসম্পদ নিয়ে নিতে লোকদের অনুমতি দিয়েছিলেন| ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর বিধির প্রতি মনোযোগ দেয় নি| প্রভু যে ভাবে চেয়ে ছিলেন সে ভাবে ইস্রায়েলের লোকরা জীবনযাপন করেনি| 
25 তাই প্রভু তাদের ওপর রুদ্ধ হন| তিনি তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী যুদ্ধ ঘটিয়েছিলেন| এমন হয়েছিল ঠিক যেন ইস্রায়েলের লোকরা আগুন দিয়ে ঘেরা ছিল| কিন্তু তারা কি ঘটছিল তা জানত না| ঘটনাটা ছিল তাদের পুড়ে যাওয়ার মতোই| কিন্তু যা ঘটছিল তারা তা বোঝার চেষ্টা করেনি|